• বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

অনাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের প্রভাব

ফলন কম হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা সোনারগায়ের লিচু চাষিরা

  • ''
  • প্রকাশিত ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মো : শাহ জালাল, সোনারগাঁ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

অনাবৃষ্টি ও টানা তাপপ্রবাহের কারণে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় পড়েছেন সোনারগাঁয়ের লিচু চাষিরা। ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়াগত বৈশিষ্ট্য ও নির্দিষ্ট জাতের কারণে সোনারগাঁয়ের লিচু সবচেয়ে আগে বাজারে আসে বলে এর আলাদা খ্যাতি রয়েছে। এ বছর সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় লিচুর ফলনে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন লিচু চাষিরা।

টানা তাপপ্রবাহে লিচুর গুটি যেমন ঝড়ে যাচ্ছে পাশাপাশি তা পরিপুষ্টও হচ্ছে না। এতে করে লিচু বাগান মালিক ও মৌসুমি লিচু ব্যবসায়ীরা লোকসানের শঙ্কায় আছেন।

অনাবৃষ্টির কারণে লিচু পুষ্ট না হওয়ায় এ বছর আশানুরূপ দাম পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন চাষিরা। সোনারগাঁয়ের কদমি লিচুর স্বাদ কিছুটা টক-মিষ্টি। তবে দেশি জাতের লিচু তুলনামূলক মিষ্ট। তাই এ লিচুর চাহিদা বেশি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি হিসাবে সোনারগাঁয়ে ১০৫ হেক্টর জমিতে ৬৬৬টি বাগানে লিচুর আবাদ হয়েছে। এর বাইরেও এখানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লিচুবাগান আছে। অনাবৃষ্টির কারণে উপজেলার গাবতলী, ষোলপাড়া, দুলালপুর, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, খাসনগর দীঘিরপাড়, চিলারবাগ, পানাম, নোয়াইল, দত্তপাড়া, বাগমুছা, অর্জুন্দী, দরপত, গোয়ালদী, টিপরদী, হরিষপুর, ভট্টপুর, লোকশিল্প জাদুঘর এলাকা, গোবিন্দপুর, হাঁড়িয়া, বালুয়া দীঘিরপাড় ও সনমান্দিসহ বেশিরভাগ এলাকার লিচু বাগানেই এ বছর গুটি ঝরে যাচ্ছে। এছাড়া লিচু আশানুরূপ পুষ্টও হয়নি।

সোনারগাঁয়ের লিচুর মধ্যে বেশি চাহিদা মোজাফফরপুরী, এলাচি ও পাতি লিচুর। এ ছাড়া কদমি ও চায়না-৩ লিচু বর্তমানে সোনারগাঁয়ে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। এসব লিচু পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বাজারে আসে। সোনারগাঁয়ের লিচু আগাম বাজারে আসে। এ কারণে ভালো দাম পাওয়ায় এখানকার চাষি ও লিচু ব্যবসায়ীরা অনেকটাই লাভবান হন।

উপজেলার গাবতলী এলাকার লিচুচাষি ইসলাম মিয়া বলেন, ‘মুকুল অবস্থায় আমার তিনটি বাগান গত বছর প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার সেগুলো ৪ লাখের কমে বিক্রি করতে হয়েছে। এমনিতেই এ বছর লিচুর ফলন কম হয়েছে, তার ওপর খরতাপের কারণে গুটি ঝরে যাচ্ছে। এ ছাড়া তীব্র রোদ ও খরায় লিচু পুষ্ট হচ্ছে না। এভাবে খরতাপ চলতে থাকলে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।’

এদিকে সোনারগাঁয়ের পুরোনো হিসেবে পরিচিত সাধুর লিচুবাগান গাছে মুকুল থাকা অবস্থায় গত বছর প্রায় ৭ লাখ টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর তা মাত্র ৪ লাখে বিক্রি হয়েছে।

লিচুচাষি আবুল কালাম বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সোনারগাঁয়ের লিচু বাজারে চলে আসবে। তবে গুটি ঝরার কারণে এবার বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীরা তেমন মুনাফা করতে পারবেন না।’

ষোলপাড়া গ্রামের লিচুচাষি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘অব্যাহত খরার কারণে লিচুর গুটি সব ঝরে যাচ্ছে। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’

সোনারগাঁ উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, অধিক তাপমাত্রার কারণে লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। এতে সোনারগাঁয়ের লিচুচাষিরা অনেকটাই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। তবে এ সমস্যা নিরসনে আমরা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। লিচু গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে রিং করে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিতে হবে। এ ছাড়া ইউরিয়া ও বরিক অ্যাসিড পানিতে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করলে গুটি ঝরা রোধ করা সম্ভব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads